আবু তাহের : রংপুর জেলার কোতোয়ালি থানার পুলিশ গত ২৯ ডিসেম্বর তারিখ রাতে লালমনিরহাট জেলা বুড়িমারী হতে ছিনতাই হওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধারসহ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য হরি কুমার রায় ওরফে জয় (২৪) রংপুর কোতয়ালী থানার এস আই আনিছুর ও এস আই জাহাঙ্গীর আটক করে।
আটককৃত ছিনতাইকারি লালমনিরহাট জেলা ও থানার তেলিপাড়া বাজারের মহেন্দ্রনগর রনজিত কুমার রায়ের পুত্র হরি কুমার রায় ওরফে জয় বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত ইং ১৭মে-২০২০ তারিখ রাত্রি ৯.৩০ টার সময় ব্যবসায়ী মোঃ আরিফুল ইসলাম রাজন সঙ্গীয় পলাশসহ তার লাল রংয়ের টিভিএস অ্যাপাচি মোটরসাইকেল যোগে পাগলাপীর হতে নিজ বাড়ি যাওয়ার পথে হরিদেবপুর ভেলুপাড়া দোয়ানি সড়কের ব্রিজের ফাঁকা জায়গায় অজ্ঞাত নামা ৩/৪ জন ছিনতাইকারী রশি টেনে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে আচমকা লাঠি দিয়ে মারপিট করে তাকে এবং তার সঙ্গে পলাশ সরকারকে হাত পা বেঁধে পাশের ধানক্ষেতে ফেলে রেখে নগদ টাকা, মোবাইল ও মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।পরে আরিফুল ইসলাম রাজন, পলাশ সরকার হাত ও পায়ের বাধন খুলে ডাক চিৎকার করে স্থানীয় লোকজন ডেকে উল্লিখিত ঘটনার কথা বলেন।
বাদী প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা করে রংপুর কোতয়ালী থানায় মামলা নং ৫ তাং ২২-৫-২০২০ ধারা ৩৯২ পেনাল কোড দায়ের করে।
বাদী, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ মোটরসাইকেল উদ্ধার ও উক্ত এলাকার নিরাপত্তা বিষয়ে রংপুর জেলার পুলিশ সুপারের নিকট আবেদন জানালে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ তদন্তে নামে এবং গোয়েন্দা নজরদারিসহ ছিনতাইকারী বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এর প্রেক্ষিতে উল্লিখিত ছিনতাই হওয়া মোটর সাইকেল লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারী বাজার হতে উদ্ধার এবং ছিনতাইকারী সদস্যকে গ্রেপ্তার করে । ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারে অভিযান ও তদন্ত অব্যাহত আছে।
মোটরসাইকেল উদ্ধার ও ছিনতাইকারী গ্রুপের সদস্যদের গ্রেপ্তার হওয়ার সংবাদে মামলার বাদী ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সুধীমহল সন্তোষ প্রকাশ করে রংপুর জেলার পুলিশ সুপার ও কোতােয়ালী থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমানকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানায় দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বের পাশাপাশি প্রতিটি স্কুল-মাদ্রাসা কলেজে গিয়ে শিক্ষক ছাত্রদের নিয়ে পড়ালেখার উপকারিতা, পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য,শিক্ষকদের প্রতি সম্মান দেখানো, যেখানেই মাদক সেখানেই প্রতিরোধ, মাদক বিরোধি প্রচারনা,শিশুদের ফেসবুক বা মোবাইলে ব্যবহার থেকে বিরত রাখা, ইভটিজিং প্রতিরোধে করণীয়, নারী শিশু পাচাররোধে করণিয় বাল্যবিবাহ, যৌতুক,সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর শিক্ষাসহ বিভিন্ন গুজব প্রতিরোধে সচেতন করতেন।
এসময় তিনি ঠিকানাবিহীন অজ্ঞাত যুবক কথিত লালটু পাগলাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মৃত্যুপ্রায় ব্যাক্তিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে মিডিয়া পাড়ায় হৈচৈ তুলে পুলিশের ভাবমুর্তি উজ্জল করেছিলো।লালটু প্রেমে পাগল ওসিকে নিয়ে পুলিশের বিভিন্ন মহলে প্রশংসার ঝড় বইছিলো। সাঘাটার সচেতন মহলে মানবিক পুলিশ অফিসার উপাধি পেয়েছিলো তিনি। শুধু তাই নয় তার আশু হস্তক্ষেপে স্বামী-স্ত্রীর কলহ বিবাদের জের ধরে অনেক বিবাহ বিচ্ছেদ হতে ধরলেও তা থেকেও রক্ষা করেছেন। বন্যাকালিন সময়ে বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরনসহ কুরবানি ঈদে তিনি তার বাড়িতে কুরবানি না দিয়ে সেই কুরবানি থানায় করে তার নিজস্বভাগ ও আত্নীয় স্বজনের ভাগের মাংস দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরন করেছেন।কম্বল দিয়ে শীতে ছিলেন শীতার্ত মানুষের পাশে।
পরে তিনি বদলী হয়ে গাইবান্ধা ডিবির ওসির দায়িত্ব পালনকালে শতাধিক মোটর সাইকেল চোর গ্রেপ্তার, চুরি যাওয়া মোটর সাইকেল উদ্ধার, আগ্নেয় অস্ত্রসহ আন্তজেলা ডাকাত দলের নেতা গ্রেপ্তার করেন। এছাড়াও তিনি মাদক ও জুয়ারুদের কাছে আতঙ্কিত এক নাম ছিলো । তার মানবিকতা , সাহসিকতা, দায়িত্বপালনে নির্ভিকতার কথাও ছাত্রদের প্রতি ভালোবাসা এখনোও সবার মুখে মুখে। এমনি সময়ে তিনি আবার বদলী হয়ে চলে যান রংপুরে। সেখানেও তিনি তার কর্মদক্ষতায় ভালোবাসায় সিক্ত করবে লাখো মানুষের হৃদয় । পুলিশের ভাবমুর্তি উজ্জল করবে তার দায়িত্ব পালনে। এমনটাই কামনা সবার।